• এক মাসেও সন্ধান মেলেনি শার্শার অপহৃত গৃহবধূ লাবনীর

জেমস আব্দুর রহিম রানা, স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের শার্শা উপজেলায় কলেজ পড়ুয়া এক গৃহবধূকে জোর করে অপহরণ করে তুলে নেওয়ার এক মাসের মধ্যেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

উপজেলার বাগআঁচড়া সাতমাইল মাঠপাড়া গ্রামের জিয়ারুল ইসলাম ইমনের স্ত্রী সোমাইয়া ইসলাম লাবনীকে একই গ্রামের হুসাইন আহম্মেদ নামে এক বখাটে যুবক জোর করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এক মাস আগে পালিয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারটির অভিযোগ।

এ ব্যাপারে শার্শা থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রায় এক মাস হতে চললেও গৃহবধূকে উদ্ধার করা যায়নি। মেয়েটির কোন সন্ধান না পেয়ে তার পরিবার হতাশায় ভুগছে। লাবনী শার্শার বাগআঁচড়া সাতমাইল গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।

গৃহবধূ লাবনীর স্বামী জিয়ারুল ইসলাম ইমন বলেন, আমি প্রায় ১০ বছর তাকে বিয়ে করেছি। তাকে কোন রকম খারাপ কোন কাজের সাথে জড়িত দেখিনি। মাঝে মধ্যে তারই চাচা পরিচয়ের ওই হুসাইন তাকে নানা ধরনের কু-প্রস্তাব দিলে সে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করতো। আমার স্ত্রী যশোর এম এম কলেজের হিসাব বিজ্ঞানের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী। অন্যদিকে হুসাইন ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে।
লাবনীর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে ৮ম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় বিয়ে দিয়েছি। জামাই ইমন এম.এ পাশ। তারা আমার বাড়িতে থাকতো। আমার একটি মাত্র ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ায় আর কোন ছেলে মেয়ে না থাকায় তাদের বাড়িতেই রেখেছি। পাশের বাড়ির লাবনীর চাচা পরিচয়ের হুসাইন মাঝে মধ্যে তার মেয়েকে নানা কু-প্রস্তাব দিত। এর আগে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল হুসাইন তার মেয়েকে জোর করে নিয়ে পালিয়ে যায়। আমার মেয়ে কৌশলে পরদিন সেখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়।

এরপর গত ১৮ নভেম্বর মেয়েকে আবারও ওই হুসাইন তুলে নিয়ে যায়। এবার অনেক খুজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে অবশেষে শার্শা থানায় গত ২৫ নভেম্বর অভিযোগ দায়ের করি। পুলিশ আসলেও উদ্ধার কাজে কোন অগ্রগতি হয়নি। আমরা আশঙ্কা করছি নাশকতার মামলার আসামি গাঁজা সেবনকারী হুসাইন আমাদের মেয়েকে জীবিত রেখেছে কিনা, মেরে ফেলেছে। আমার মেয়েকে তুলে নেওয়ার কাজে সহযোগিতা করেছে হুসাইনের মা লতিফুন্নেছা।

এ ব্যাপারে সরেজমিনে খোঁজ নিতে হুসাইনের বাড়ি যেয়ে তাদের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। গ্রামের লোকজন জানান, হুসাইন একজন বখাটে ছেলে। সে বিএনপি জামাতের নাশকতা মামলার একজন আসামি। এর আগে সে নাশকতার মামলায় জেল খেটে বাড়ি আসে। বাড়ি এসে মেয়েটির স্বামী ইমনকে গ্রাম থেকে চলে যাওয়ার হুমকিও দেয় হুসাইন।

এ ব্যাপারে শার্শা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মোস্তাফিজুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করছি। তাদের বাড়িতে ইতোমধ্যে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম আমাদের প্রতিবেদক জেমস আব্দুর রহিম রানাকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে মেয়েটির মা। আমরা মেয়েটিকে উদ্ধারের ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।